আলোর মনি রিপোর্ট: সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কাবিননামা (নকল) দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টীবাড়ী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী ফয়সাল আহমেদের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৫ মে) বিকেলে ভুক্তভোগী গৃহবধু আফরোজা বেগমকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে একাধিক কাগজে স্বাক্ষর নেন কাজী ফয়সাল আহমেদ।
এর আগে বুধবার (১১ মে) লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) আমিনুর রহমান ও তার ছোট ভাই লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে কাবিননামার (নকল) কপি উত্তোলনের জন্য ৩০হাজার টাকা দাবি করার অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী গৃহবধু।
পরে লালমনিরহাট জেলা রেজিস্ট্রারকে অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক। সে মোতাবেক মঙ্গলবার (১৭ মে) সকাল ১১টায় ওই অভিযোগের তদন্তের জন্য অভিযুক্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী আমিনুর, তার ছোট ভাই লুৎফর রহমান ও ভুক্তভোগী গৃহবধুকে স্বাক্ষ্য প্রমাণসহ তদন্তস্থলে উপস্থিতির জন্য নোটিশ প্রেরণ করা হয়।
কিন্তু ওই তদন্তের পূর্বেই রোববার (১৫ মে) বিকেলে ভুক্তভোগী গৃহবধু আফরোজা বেগমকে নিজ বাড়িতে ডেকে একাধিক কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কাবিননামা (নকল) দেন কাজী ফয়সাল আহমেদ। এদিকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিয়ে আতঙ্কে ভুগছে ভুক্তভোগী পরিবারটি।
জানা গেছে, অভিযুক্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী আমিনুর রহমান এমপিওভূক্ত শিক্ষক হিসেবে পার্শ্ববর্তী একটি বিদ্যালয়ে চাকুরীর কারণে নিকাহ রেজিস্ট্রারের যাবতীয় কার্যক্রম তার ছোট ভাই ও ছেলের মাধ্যমে পরিচালনা করেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করছেন লুৎফর রহমান। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গৃহবধু আফরোজা বেগমের বিয়ে। মাত্র ১২বছর বয়সে বিয়ে হয় তার। ১৪বছরে সন্তান জন্ম দেন আফরোজা। স্বামীর যৌতুকের দাবি না মানায় সন্তানকে রেখে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় তাকে। আইনী ব্যবস্থা নিতে কাবিননামার (নকল) জন্য নিকাহ রেজিস্ট্রারের স্মরণাপন্ন হলে প্রথমে তারা বিয়ে নিবন্ধনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে নানা টালবাহনার পর মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। যার একটি অডিও ক্লিপ ইতোমধ্যে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে অভিযুক্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার কাম এমপিও শিক্ষক কাজী আমিনুর রহমানকে দায়মুক্ত করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন- আর এক এমপিও শিক্ষক কাম নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী ফয়সাল আহমেদ। যিনি তদন্তের পূর্বে ভুক্তভোগীকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মূলত তদন্ত কার্যক্রমকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
শিশু বিবাহ নিবন্ধন ও নকল কপির বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী আমিনুর রহমান বলেন, বিয়ের এক/দুই বছর পর মেয়েদের বয়স ধর্তব্য নয়। কাবিননামা (নকল) দেয়া যায়।
আর সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়ে কাজী ফয়সাল আহমেদ বলেন, জেলা রেজিস্ট্রারের নির্দেশে আফরোজা বেগমকে কাবিননামা (নকল) সরবরাহ করা হয়। সে সময় তার দুটি স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।